গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বন্যার পানিতে ডুবে আছে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের প্রায় ২০ জেলা। উজানে ভারি বৃষ্টির কারণে চলমান বন্যায় অর্ধকোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; এক সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে প্রায় শতাধিক। এ পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, বন্যার পরে ভয়াবহ সংকটে পড়ার (ডিভাস্টেটিং হাঙ্গার) ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বন্যায় বিপুল পরিমাণ কৃষিজমির ফসল ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে বন্যার্তদের কাছে খাদ্য সরবরাহ দেয়াটাও ঝুঁকিতে পড়েছে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) বাংলাদেশের বন্যা ও বন্যার্ত মানুষদের বিষয়ে এ বিবৃতি দেন জাতিসংঘ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
রয়টার্সের ওই খবরে বলা হয়, ‘জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস্টা র্যাডার বিবৃতিতে বলেছেন, বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠা বহু মানুষ সব কিছু হারিয়েছেন। তারা বাড়িঘর, সহায় সম্পদ, ফসল সব হারিয়েছেন। এসব মানুষের এখনই খাদ্যের প্রয়োজন। দীর্ঘ মেয়াদের তাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ খাদ্য নিরাপত্তা ভয়াবহ এক সংকটেরর মুখে।’
আরও বলা হয়, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশের বন্যা-আক্রান্ত দুই লাখেরও বেশি মানুষের কাছে ত্রাণ হিসেবে খাদ্য পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের দুর্যোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বুধবার বলেছেন, বন্যায় কমপক্ষে ১৩২ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৫ লাখ মানুষ। এবারের বন্যায় বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চলের এক-তৃতীয়াংশ তলিয়ে যায়। বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতির এ দেশে এ অবস্থা রয়েছে গত দু’সপ্তাহ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এবারের বন্যায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে কমপক্ষে ৮০০ মানুষ মারা গেছে। ১০ লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহারা হয়েছে। ত্রাণকর্মীরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন, আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ভয়াবহ খাদ্য সংকট ও পানিবাহিত রোগ দেখা দিতে পারে। এর ওপর রয়েছে অব্যাহত বৃষ্টি।’
ডব্লিউএফপি বলেছে, ‘বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বহু পরিবার এখনও অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এখনও বাড়ি ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এসব মানুষ তীব্র খাদ্যাভাব ও দারিদ্র্যের মুখে পড়ার বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে। খাদ্যসহ দরকারি জিনিসপত্র কিনতে ৩ মাসের জন্য এক লাখ বয়স্ক, অচল মানুষ, পুরুষহীন পরিবারকে ৪ হাজার টাকা করে দিচ্ছে ডব্লিউএফপি।