বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের আশপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নতুন করে শিল্প-কারখানা স্থাপন না করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই এলাকার মধ্যে কতটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে তার তালিকা তৈরি করে ৬ মাসের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
এর আগে গত এপ্রিল মাসে সুন্দরবনের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে স্থাপিত শিল্প-কারখানাসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। একইসঙ্গে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে যেসব কল-কারখানা স্থাপনের অনুমতি বা ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে তা বাতিলের আবেদন জানানো হয়।
সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত ৪ এপ্রিল এই রিট আবেদন দাখিল করেন। রিট আবেদনে পরিবেশ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি ও সুন্দরবনের আশেপাশের জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।
আবেদনে বলা হয়, ‘পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন এবং এর চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে সুন্দরবনের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমি, পানি, বায়ু ও শব্দ দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না।’
কিন্তু গণমাধ্যমে খবর এসেছে, পরিবেশ অধিদফতর ইতিমধ্যে প্রায় একশ’ ৫০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প করার জন্য অবস্থানগত ছাড়পত্র দিয়েছে। যার মধ্যে জাহাজ ভাঙা শিল্পসহ পরিবেশ দূষণকারী প্রকল্প রয়েছে। এসব শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেয়া সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ ও পরিবেশ আইন ১৯৯৫-এর সুস্পষ্ট লংঘন। তাছাড়া এসব শিল্প কারখানা সুন্দরবনের জন্য হুমকিস্বরূপ বলেও রিটে উল্লেখ করা হয়।