যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ এবং ওষুধ কোম্পানি সানোফির যৌথ প্রচেষ্টায় এ এন্টিবডিটি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি প্রাণঘাতী এইডস রোগের ভাইরাস এইচআইভি’র ৯৯ শতাংশই এ এন্টিবডিতে আক্রান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই এন্টিবডি এইচআইভি’র তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে এমনভাবে আক্রমণ করবে যেন ভাইরাসটি কোনওভাবেই তা প্রতিরোধ করতে না পারে।
আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটি এ আবিষ্কারকে ‘চমকপ্রদ অগ্রগতি’ বলে বর্ণনা করেছে।
২০১৮ সাল থেকে মানুষের শরীরে নতুন এন্টিবডির কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হবে; তখনই বোঝা যাবে এটি ভাইরাস নির্মূলে সক্ষম হবে কী না।
বিবর্তনের অবিশ্বাস্য ক্ষমতা এবং দ্রুত অবস্থান বদলে সক্ষমতার কারণে এইচআইভি ভাইরাসের সঙ্গে মানবশরীর সহজে পেরে ওঠে না।
ফ্লু’র মতো এ ভাইরাসেরও তিনটি প্রকার একইসময়ে মানুষের শরীরে অবস্থান করতে পারে।
যে কারণে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে একইসঙ্গে অনেকগুলো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে হয়, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এইচআইভি’র কাছে পরাজিত হতে হয়।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, কয়েক বছরের সংক্রমণের পর কিছু রোগীর শরীরে এমন এক শক্তিশালী এন্টিবডি তৈরি হয়, যা এইচআইভি’র মূল কিছু উপাদানকে আক্রমণ করে এবং বৃহদাংশ জীবাণুকে মেরে ভাইরাসটিকে নিস্ক্রিয় করে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এই ‘ব্রডলি নিউট্রালাইজিং এন্টিবডি’কেই এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করতে চান।
জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা এ ধরণের তিনটি এন্টিবডি মিলিয়ে শক্তিশালী ‘ট্রাই-স্পেসেফিক এন্টিবডি’ বানিয়েছেন যা এইচআইভি সংক্রমণ ৯৯ শতাংশ ঠেকাতে পারবে।
সানোফির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গেরি নাবেল জানান, ২৪টি বানরের শরীরে প্রথমে ‘ট্রাই-স্পেসেফিক এন্টিবডি’ দেয়া হয়, পরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এইচআইভি ভাইরাস।
দেখা যায়, কোনও বানরের শরীরেই শক্তিশালী এন্টিবডিকে টপকে এইচআইভি বাসা বাঁধতে পারেনি।
“এটি সুরক্ষার ক্ষেত্রে চমৎকার ফল দেখিয়েছে,” বলেন ড. নাবেল।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, স্ক্রিপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীরাও এ গবেষণায় সহায়তা করেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।