Logo




বগুড়া শাজাহানপুরে বিলুপ্তির পথে মৃৎ শিল্প

প্রতিবেদকের নাম :
আপডেট করা হয়েছে : বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৮

মাসুম হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়া শাজাহানপুরে ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। আড়িয়া ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের সবাই মৃৎ শিল্প নির্ভর পরিবার। বর্তমানে ওই গ্রামের কুমারদের খুবই খারাপ অবস্থা। পরিবারের সবাই মিলে কাজ করেও তারা দুবেলা দুমোঠ খাবার যোগার করতে পারছেন না।
জানা গেছে, উপজেলার পালপাড়া গ্রামে প্রায় দেড়শত কুমার পরিবারের এখন দুর্দিন যাচ্ছে। বসতবাড়ির জমিটুকু ছাড়া তাদের কারোরই চাষাবাদের জমি নেই। প্লাষ্টিক ও ধাতব তৈজসপত্রের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন তারা। দারিদ্রতার কারনে তারা সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারছেন না। তাদের সনাতনি এ পেশা কোন রকমে টিকিয়ে রেখে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। আগে নদীর ধার ও পুকুর থেকে মাটি সংগ্রহ করতো তারা। বর্তমানে অনেক দূর থেকে তাদের বেশী দামে মাটি কিনতে হচ্ছে। এতে তারা খরচের তুলনায় তেমন লাভ করতে পারছেন না। মাটির তৈরী অন্যান্য তৈজসপত্রের চাহিদা না থাকায় বর্তমানে তারা দইয়ের সরা ও কাপ তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
পাল পাড়ার বাবলু পাল , অঞ্জনী রানী পাল, উত্তম পাল, গীতারানী পাল, চায়না পাল সহ অনেকে জানান, বাজারে প্লাষ্টিক ও ধাতব তৈজসপত্র আসাতে তাদের মৃৎ শিল্পের চাহিদা কমে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে জীবন-যাপন করছেন তারা। বাড়ির আশপাশে জন্মানো কচু, শাকপাতা ভর্তা দিয়ে তাদের খাবার চলছে। বিভিন্ন এনজিও,র লোনের টাকা পরিশোধ করতে তাদের কোন কোন দিন অনাহারে কাটে।
তারা আরও জানায়, আগে তারা নদীর ধার ও পুকুর থেকে মাটি তুলতো। এখন তাদের বেশী দামে মাটি কিনতে হচ্ছে। ১ট্রলি মাটি তাদের ৬শত টাকায় কিনে নিতে হয়। ১ট্রলি মাটি দিয়ে দইয়ের কাপ তৈরী করতে ৫বস্তা কাঠের গুড়া ও ৮থেকে ১০মন খড়ির প্রয়োজন হয়। তাদের কাঠের গুড়া বস্তা প্রতি ১৫০টাকা ও খড়ি মন প্রতি ১২০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। নারী পুরুষ ১মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা সেই মাটি থেকে প্রায় ১০হাজার দইয়ের কাপ তৈরী করেন। কাপ পোড়ানো শেষে প্রায় ১২হাজার টাকায় তা বিক্রী করেন। সব খড়চ বাদ দিয়ে যে লাভ হয় তাতে শ্রমের মজুরি টুকুও ওঠেনা। প্রতিদিনের খাবার কমিয়ে অর্থ বাঁচিয়ে সনাতনি পৈত্রিক পেশা টিকিয়ে রেখেছেন তারা। ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তারা সরকারের সাহায্যে-সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন।
শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার বাদল জানান, মৃৎ শিল্পকে বাজারে টিকিয়ে রাখতে কুমারদের আধুনিক যন্ত্রপাতির দিয়ে আধুনিকায়ণ করে গড়ে তুলতে হবে। এর আগে তাদেরকে একটা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। আবার প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
শাজাহানপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি।

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com