Logo




শাজাহানপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিবেদকের নাম :
আপডেট করা হয়েছে : শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১৮

মাসুম হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর ফুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, নাশকতা, চাঁদা ও তদবীরবাজিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী ২০১১ সালে দুপচাঁচিয়া থেকে বদলী হয়ে শাজাহানপুর উপজেলায় আসেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেন। সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন দপ্তরে হয়রানিমূলক অভিযোগ করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পদে ঘন ঘন রদবদল হতে থাকে। এতে শাজাহানপুরে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশৃংখলা সৃষ্টি হয় এবং শিক্ষক সমাজ চরম দুর্ভোগের শিকার হন।
শাজাহানপুরে কয়েকটি বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম-নৈশপ্রহরী নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির সদস্য মনোনয়ন এবং পরবর্তীতে ১৬ জন দপ্তরী-কাম-নৈশপ্রহরীর বেতন পাইয়ে দেবার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা আতœসাত করেছেন। শুধু তাই নয়, অভ্যন্তরীন ও বহিরাগত শিক্ষক বদলীর দোহাই দিয়ে তিনি উৎকোচ গ্রহণ করেন। বদলীর ক্ষেত্রে কোন শিক্ষক টাকা না দিলে তাকে নানা ভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। শাজাহানপুরের বর্তমান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ রানার নিকট বদলী বানিজ্যসহ অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পারায় তার বিরুদ্ধেও হয়রানিমূলক মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন। এমতাবস্থায় অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট কঠোর প্রতিবাদ করেছেন শাজাহানপুরের শিক্ষক সমাজ। সেই সাথে শাজাহানপুরে প্রাথমিক শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও তদবীরবাজ শিক্ষক জুলফিকার আলীকে অবিলম্বে অন্যত্র বদলী করে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক সমাজ। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে গত ২১ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছেন শাজাহানপুরের সাজাপুর এলাকার আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ইতোপূর্বে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, হত্যার হুমকি, সরকারি কাজে বাঁধা প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে বগুড়া ও ঢাকায় প্রায় হাফ ডজন মামলা দায়ের হয়। এমনকি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট চাঁদা দাবির ঘটনায় বিভাগীয় মামলা হয়। উপরোক্ত বিভিন্ন ঘটনায় তাকে ৩ বার চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, তদবীরসহ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে আছেন। সমিতির দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বের কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় তিনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের রোষানলে পড়েন এবং সাময়িক বরখাস্ত হন।
এদিকে প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল জানিয়েছেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় উত্থাপন করে সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com