মাসুম হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গন্ডগ্রাম কালিতলা গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির(পবিস) অর্ধশতাধিক গ্রাহকের কাছে ১৪ বছর আগের বকেয়া বিল পরিশোধের নোটিশ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অনেকের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলে ২০০৪ সালের মাসের সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও সেখানে মাসের নাম উল্লেখ করা হয়নি। যাদের কাছে তৎকালীন সময় বিল পরিশোধের রিসিভ রয়েছে তাদেরকে বলা হয়েছে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে তখন সেটি দেখাতে। তাহলে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না। এদিকে অধিকাংশ গ্রাহকদের কাছে সে সময়ের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের রিসিভ সংরক্ষণ করা নেই। বগুড়া পল্লী বিদ্যু সমিতি-২ থেকে বকেয়া বিল পরিশোধের নোটিশ পেয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন।
একাধিক ভুক্তভোগি জানিয়েছেন, ২০০৪ সালের শেষের দিকে সরকারি সিন্ধান্ত মোতাবেক তাদের এলাকার বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যালয় থেকে গ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রাহকের কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের নোটিশ আসে। সেখানে অনেক গ্রাহকের তৎকালীন সময়ের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলে মাসের সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও সেই মাসগুলোর নাম উল্লেখ নেই। অনেকের নোটিশে শুধু ২০০৪ সালের ৩ থেকে ৪ মাসের বকেয়া উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের অভিযোগ তারা সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার পর তাদেরকে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় নেয়া হয়েছিলো। ১৪ বছর পূর্বের ভুতুড়ে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের নোটিশ পেয়ে তারা হতবাক হয়েছেন। এমনকি নোটিশে বলা হয়েছে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়াও অনেক গ্রাহকের মোবাইল ফোনে যাওয়া বিলের এসএমএসের সঙ্গে কাগজে ছাপা বিলের গড়মিল থাকে।
ভুক্তভোগি সাধন চন্দ্র মোদক ও দুলাল চন্দ্র জানান, ২০০৪ সালের ৩ মাস করে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল তাদের নোটিশে দেখানো হয়েছে। কিন্তু তাদের কোন মাসের বিল বকেয়া নেই। ২০০৪ সালের সব মাসেরই বিদ্যুৎ বিলের রিসিভ তাদের কাছে রয়েছে। তাদেরকে জানানো হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে তখন রিসিভ দেখাতে। তাহলে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না। এদিকে সাজন চন্দ্রের নোটিশে মাসের নাম উল্লেখ ছিলো না।
গগণ চন্দ্র রায় ও উত্তম কুমার সরকার জানান, তাদের নোটিশে শুধু ৪ মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কোন কোন মাসের তা উল্লেখ করা হয়নি। তাদের সে সময়ের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া নেই। তৎকালীন সময়ের বিদ্যুৎ বিলের রিসিভ তারা সংরক্ষণ করেননি। তারা প্রশ্ন রেখেছেন টাকা না দিলে তবে কি তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
ভুক্তভোগি পুলক সরকার জানিয়েছেন, ১৪ বছর পূর্বের বকেয়া বিলের নোটিশ পেয়ে তিনি হতবাক হয়েছেন। তার কোন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া নেই। তাদের কাছে তৎকালীন বিল পরিশোধের রিসিভ না থাকলেও অফিসে কি তথ্য নেই। কতৃপক্ষ সেখান থেকে যাচাই করতে পারে।
এদিকে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর গ্রাহক শাহাদত হোসেন জানান, তার ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে জানানো হয় সেপ্টেম্বর মাসে তার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ৬৯৫ টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎ বিলের কাগজে সেটা দেখানো হয়েছে ৯৮২ টাকা।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২- এর জিএম খালেকুজ্জমান বলেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ থাকা সত্ত্বেও যাদের কাছে বকেয়া বিলের নোটিশ গেছে, তারা কাগজপত্র নিয়ে অফিসে যোগাযোগ করলে বিষয়টি সমাধান করা হবে। তৎকালীন সময়ের বিল পরিশোধের রিসিভ যাদের নেই, তাদের বিল পরিশোধ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর টাকার সঙ্গে যাদের বিলের কাগজে টাকা গরমিল থাকে তাদেরকেও অফিসে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধান করে নিতে হবে।