মাসুম হোসেন, সটাফ রিপোর্টার: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় স্ত্রী নূরজাহান বেগমকে (৪৩) গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তাঁর স্বামী শাহীন আলম (৩৪)। গতকাল বুধবার বিকেলে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতের বিচারক খালিদ হাসান খানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীমূলক স্বীকারোক্তি দেন তিনি।
গত মঙ্গলবার ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নূরজাহান বেগম (৪৩) নামের এক গৃহবধূর গলা কেটে হত্যার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামী শাহীন আলমের বিরুদ্ধে। উপজেলার শাকপালা দীঘিরপাড় গ্রামে তাঁদের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। নূরজাহান বেগম জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার পোথাট্টি গ্রামের মৃত সাবাজ সাকিদারের মেয়ে। এ বিষয়ে বুধবার তাঁর মা আছুবা বেওয়া বাদী হয়ে শাজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। শাহীন আলম ওরফে সুমন বগুড়ার সদর উপজেলার কদিমপাড়া গ্রামের মৃত দৌলত জামানের ছেলে। তিনি নিহত নূরজাহান বেগমের তৃতীয় স্বামী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, পরিচয়ের সূত্রে বগুড়ার জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ওয়ার্ড বয় শাহীন আলমের সঙ্গে নূরজাহানের বিয়ে হয় গত ২২ আগস্ট। এর আগে শাহীনও তাঁর আগের স্ত্রীকে তালাক দেন। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর জের ধরেই গত মঙ্গলবার কোমল পানীয়ের (কোকাকোলা) সঙ্গে ১০টি ঘুমের ওষুধ নূরজাহানকে খাওয়ান শাহীন। স্ত্রী অচেতন হলে আবারও তিনটি চেতনানাশক ইনজেকশন করেন। এতে অচেতন হয়ে পড়েন নূরজাহান। এরপর বাড়ির মধ্যেই ধারালো ছুরি দিয়ে নূরজাহানকে গলা কেটে হত্যা করেন। পুলিশ খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে ১০ টার দিকে লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার ওই দিন রাতেই বগুড়া সদর থানা মোড় এলাকা থেকে শাহীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অপরদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শাহীন আলম তার স্ত্রীকে হত্যা করে বগুড়ার সদর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহাজানপুর কৈঁগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শরিফুল ইসলাম জানান, বিয়ের পর থেকেই শাহীন ও নূরজাহানের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। নূরজাহান অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতেন। এতে তাঁদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব আর বেশি হয়। এ কারণে শাহীন স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে নূরজাহানকে হত্যা করেন। বিয়ের ১২ দিনের মাথায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। শাহীন আলম নূরজাহান বেগমের তৃতীয় স্বামী এবং নূরজাহান বেগম শাহীন আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী। গতকাল বুধবার ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারার এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শাহীন।