খলিলুর রহমান আকন্দ শিবগঞ্জ(বগুড়া)
বগুড়ার শিবগঞ্জে অনন্তবালা গ্রামে শিল্পী আক্তার (৪০) নামে এক নারীকে চুরির অপবাদ দিয়ে শুক্রবার দিবালকে সবার সামনে কপির ক্ষেতে বাঁশের সাথে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করার ছবি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ঘটনাটি এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। পরে ওই নারীকে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় থানায় সোপর্দ করা হয়।
নির্যাতিতা নারী অভিযোগ করে বলেন, অনন্তবালা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রাফির সাথে গত ৮/৯ মাস বিয়ে হয়। এরপর থেকে তারা ঠেঙ্গামারা এলাকায় একটি ভাড়ার বাসায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন। প্রায় ১৫/২০ দিন ধরে স্ত্রী শিল্পীর কোন খোজখবর না নেয়ায় শুক্রবার সকালে শিল্পী অনন্তবালা গ্রামে স্বামী রাফির বাড়িতে গিয়ে উঠেন। এ সময় পরিবারের লোকজন তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্ঠা করে। এতে তারা ব্যর্থ হয়ে বাড়ির পাশে কপির ক্ষেতে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে বাঁশের সাথে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় শিল্পীকে নির্যাতন করে। এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমত ভাইরাল হয়ে পরলে টনক নড়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের। তিনি বিভিন্ন ভাবে সন্ধান করতে থাকেন নির্যাতনের শিকার শিল্পী বেগমকে (৪০)। তাকে না পেয়ে পুলিশ শিল্পী বেগমের ভাই মামুন হোসেনকে থানায় ডেকে নিয়ে যায়।এরপর তাকে বাদী করে রোববার বিকেলে এজাহার নামীয় একজন ছাড়াও অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়।
মামলার বাদী মামুন হোসেন বলেন, ‘দুপুরের পর পুলিশ আমাকে থানায় ডেকে নিয়ে যায়। এর পর কম্পিউটারে কম্পোজ করা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়।’তিনি আরও বলেন,‘মামলায় কতজনকে আসামি করা হয়েছে তা জানি না। তবে শুনেছি একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের অনন্তবালায় শিল্পী বেগম নামে ওই নারীকে কপির জমিতে চারা নষ্ট করার অভিযোগে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে মারপিট করেন একই গ্রামের রাফি ও তার লোকজন।
শিল্পী বগুড়া সদরের পলাশবাড়ী গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে। নির্যাতিত শিল্পী জমিতে কপির চারা চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে রাফি ও তার পরিবারের লোকজন ষড়যন্ত্র করেছে।
শিবগঞ্জ থানার ওসি মোঃ মিজানুর রহমান জানান,মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান আসামী রাফীকে তাৎক্ষনিক গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।