এস আই সুমনঃ মহাস্থান থেকে মোঃ ফজলুল হক(৪৫) বাড়ি বগুড়া সদরের শেখেরকোলা ইউনিয়নের তেলিহারা গ্রামে পেশায় সংবাদপত্র বিক্রেতা। দীর্ঘ ১৫/২০ বছর পূর্ব থেকে বগুড়া শহর থেকে মোটর সাইকেল যোগে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে পাঠকের হাতে পৌঁছে দিতেন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা। কিন্তু বেশ কিছুদিন হলো হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে পা ভেঙ্গে গিয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে যান তিনি। হাসপাতালে মৃত্যুর সংগে পাঞ্জা লড়ে ৭/৮ মাস চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়ী ফিরেন। বাড়ীতে বিশ্রাম নেন আরও ৬/৭ মাস। মোটর সাইকেল চালানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর অসহায় পরিবারটি অনেক কষ্টে এনজি থেকে লোন নিয়ে একটা অটো ইজিবাইক কিনেন। এই অটো ইজি বাইক দিয়েই গ্রাম ও বন্দরে সেই কাক ডাকা ভোরে পাঠকের হাতে পৌঁছে দিচ্ছিলেন পত্রিকা। দিনে স্থানীয় ও জাতীয় ৪/৫ শত পত্রিকা বিক্রি করেই দুই ছেলে ও স্তী নিয়ে সংসার চালিয়ে আসছিলেন তিনি। প্রতিদিনের মতো বগুড়া শহর থেকে শনিবার সকালে পত্রিকা নিয়ে পাঠকের হাতে পত্রিকা পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। সকাল ৭ টার দিকে বগুড়ার শিবগঞ্জের চন্ডিহারা এলাকায় বাঁধায় পরেন গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশেরর কাছে। রাস্তায় এসব গাড়ি চালানো অবৈধ এমন অভিযোগে আটকে দেয়া হয় তাকে। কর্তব্যরত সার্জেন্ট ফিরোজের কাছে তিনি অনেক অনুনয় বিননয় করেন ফজলুল হক, এতেই মন গলেনি ঐ সার্জেন্ট ফিরোজের। ইজি অটোবাইকে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা দেখেই আরও অজানা ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি। অটো ইজি বাইক থেকে পত্রিকার বান্ডিল মহাসড়কের ছুড়ে ফেলে দিয়ে অটো ইজি বাইকটি আটক করে নিয়ে যান গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানায়। হয়তো আইন আছে বলে ঠিকই করেছেন ঐ সার্জেন্ট ! কিন্তু মহাসড়কে আসার তো একটা সুনির্দিষ্ট সময় থাকা উচিত। কারন, এক ছোট রাস্তা থেকে আরেক ছোট রাস্তায় যেতে বড় রাস্তায় একটুখানি উঠতেই হয়! প্রতিনিয়ত তো শতশত সিএনজি, মহাসড়কে ঐ সব সার্জেন্টদের সামনে দিয়ে চলাচল করছে । সেটা তো থামছে না? এব্যাপারে ঐ সার্জেন্টের সাথে কথা বললে তিনি জানান, থ্রি হুইলার হাইওয়ে রোডে চালানো নিষেধ, তাই অটো ইজি বাইক থেকে পত্রিকা রেখে গাড়ীটি আটক করেছি। বিষয়টি দেখছি। গতকাল সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত ১০ টা পর্যন্ত ফজলুল হক ও তার ছেলেকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় বসে রেখে গাড়িটি না দিয়ে শুধু বলছেন বসে থাকেন, বিষয়টি দেখছি। অজ্ঞাত ক্ষোভে আজ বলির পাঠা হলো একজন অসহায় পঙ্গু সংবাদ বিক্রেতা ঘটনার পর থেকেই গতকাল থেকে বগুড়ার ও মহাস্থান এলাকার অনেক সিনিয়র সাংবাদিকেরা ঐ সার্জেন্ট ও হাই-ওয়ে ওসি’র সাথে মোবাইল ফোনে ও অফিসে গিয়ে কথা বলার পর অদ্যই রবিবার বিকাল ৩ টায় মুছলেকা দিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা শেষে পত্রিকা বিক্রেতা ফজলুল হক ফিরত পেলো তার আটক কৃত আটো ইজি বাইকটি।