ওবাইদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোটার : বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রয়াত এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার রায়ে ৭ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮নভেম্বর) এ রায় দেয়া হয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন-ওই আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আব্দুল কাদের খান এবং তার পিএস শামছুজ্জোহা, গাড়ি চালক হান্নান, ভাতিজা মেহেদি, শাহীন, রানা ও চন্দন কুমার রায়। এসময় কাদের খানসহ ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এদেরমধ্যে দন্ডপ্রাপ্ত আসামি চন্দন কুমার রায় ভারতে পলাতক রয়েছেন। এছাড়া মামলার অপর আসামি কসাই সুবল সম্প্রতি কারাগারে অসুস্থ্য অবস্থায় মারা যায়। জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক তাঁর আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবিদের দীর্ঘ ১৮ মাস যুক্তিতর্কের পর এই রায় ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকুলী বুলবুল। তদন্ত শেষে কাদের খাঁনসহ ৮ জনের র্বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী বগুড়া বাসা থেকে গ্রেফতারের পর থেকে কাদের খাঁনকে গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকে তিনি গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন। উল্লেখ্য, এই হত্যাকান্ডের পর পুলিশ দুটি মামলা দায়ের করে। একটি অস্ত্র মামলা ও অপরটি হত্যা মামলা। ইতোমধ্যে অস্ত্র মামলার রায়ে একমাত্র আসামি ওই আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আব্দুল কাদের খানকে গত ১২ জুন যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আলোচিত এ মামলা ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল প্রথম দফায় আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। বাদি, নিহতের স্ত্রী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ এ পর্যন্ত ৫৯ জন সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ করেছে আদালত। গত ৩১ অক্টোবর মামলার সাক্ষী গ্রহণ কার্যক্রম শেষ হয়। চলতি বছরের গত ১৮ ও ১৯ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি পিপি শফিকুল ইসলাম শফিক। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালতের বিচারক। এদিকে এমপি লিটনের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি ও লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকুলী বুলবুল বলেন, এই রায়ে আমরা খুশি। রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি। এব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি পিপি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, তিনি এবং বাদি সহ প্রয়াত এমপি লিটনের পরিবারের সদস্যরা এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। আসামি পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। এমপি লিটনকে যেভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে আসামি কাদের খাঁনকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কেননা হত্যাকান্ডের সময় কাদের খাঁন দেশের বাইরে ছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।