মাসুম হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার: লোকজনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে। সবাই করোনা ভাইরাসের ভয়ে আতংকিত। একজন অন্যজনের কাছ থেকে নিদিষ্ট দূরুত্বে অবস্থান করছে। আগামী দিনে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা। মজুদ রাখতে কিনছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। যেন সামনে আসছে বেঁচে থাকার এক লড়াই। এমন পরিবেশ আগে কখনও দেখা যায়নি। যেন কালো এক ছাঁয়া ধেঁয়ে আসছে, শহরে। পুরনো সম্পর্ক গুলোর মধ্যেও সন্দেহ জেগেছে। তারা তাদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে। সংক্ষিপ্ত করছে তাদের গল্প গুলো। বেঁচে থাকাটা যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন একটা অদ্ভুধ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের চোঁখে আতংকের ছাপ, মৃত্যু ভয়।শনিবার(২১ মার্চ) রাতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে এমন এক ভূতুড়ে পরিবেশ। যে সব এলাকায় মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে, সেগুলো জনশূন্য হয়ে পড়তে শুরু করেছে। ভ্রমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা, গণ-জমায়েতের ওপর বিধি নিষেধ এসব কারণ গুলো ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে উপজেলায়। ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পুরো উপজেলা। করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সাধ্যমত চেষ্টা করছে উপজেলাবাসী।এদিকে বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে একটি ‘জরুরী গণবিজ্ঞপ্তি’ জারি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. মাহমুদা পারভীন স্বাক্ষরিত এই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ^ব্যাপি নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে হোম কোয়ারেন্টাইন বা নিজ গৃহে সার্বক্ষণিক অবস্থান এক মাত্র কার্যকর উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। চীনসহ অন্যান্য দেশ হোম কোয়ারেন্টাইনকে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অন্যতম প্রধান উপায় হিসেবে ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছে। সম্প্রতি দেশে প্রত্যাগত প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এই ভাইরাস সংক্রমণ উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এমতাবস্থাতায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শাজাহানপুর উপজেলায় বিদেশ ফেরত প্রবাসী বাংলাদেশীগণ ১৪ (চৌদ্দ) দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। তারা নিজ গৃহে একটি কক্ষে অবস্থান করবেন। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’নভেল করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানাগেছে, এই রোগটিকে প্রথম দিকে ‘চায়না ভাইরাস, করোনা ভাইরাস, ‘২০১৯ এনকভ’সহ বিভিন্ন নামে ডাকা হচ্ছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে বিশ^ স্বাস্ব্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় ‘কোভিড-১৯’ যা ‘করোনা ভাইরাস ডিজিজ-২০১৯’ এর সংক্ষিপ্ত রুপ। ভাইরাসটির আরেক নাম ‘২০১৯-এনসিওডি’ বা নভেল করোনা ভাইরাস। ভাইরাসটি একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে ছড়াতে নিজের জিনগত গঠন পরিবর্তন করে। যাকে বলে ‘মিউটেশন’। এ কারণে ভাইরাসটি আরও বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে, এমন আশংকা রয়েছে। এই রোগ থেকে এখন পর্যন্ত রক্ষার একমাত্র উপায় হলো অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেয়া।