Logo




বগুড়ার শাজাহানপুর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার সাংবাদিককে ডেকে মামলার হুমকি ইউএনওর

প্রতিবেদকের নাম :
আপডেট করা হয়েছে : মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০২০

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ফোন ধরা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় এক সাংবাদিককে ডেকে মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গবার বগুড়ার শাজাহানপুরের ইউএনওর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন মাসুম হোসেন নামের এক সাংবাদিক।

মাসুম প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার শাজাহানপুর উপজেলা প্রতিনিধি। শাজাহানপুর মডেল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও রয়েছেন মাসুম।

গত মঙ্গলবার মাসুম ফেসবুকে লেখেন, ‘এই দুর্যোগকালীন সময়ে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা পারভীনের দায়িত্ব অবহেলাটা বেড়ে গেছে। তিনি মুঠোফোন রিসিভ একেবারেই করেন না। অনেকবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায় না। তিনি নিজেকে কী ভাবেন?? ওটা কী সরকারি ফোন নম্বর, তার ব্যক্তিগত নম্বর নয়। ফোন রিসিভ করার তার ইচ্ছা, অনিচ্ছা না, দায়িত্ব।’

ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর স্থানীয় আরও কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে মন্তব্য করেন। তারাও লেখেন শাজাহাপুরের ইউএনওকে ফোনে পাওয়া যায় না। মাসুম বলেন, এরপর থেকে তাকে শাজাহানপুরের একাধিক ব্যক্তি ফোন করে স্ট্যাটাস ডিলিট করতে বলেন। অবশ্য গতকাল সকালের দিকে তিনি তার স্ট্যাটাস ডিলিটও করেছেন। এর গতকাল বুধবার দুপুরে শাজাহানপুর মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফুর রহমান মিঠু তাকে ফোন করেন। ফোনে মিঠু বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তোমার সাথে সরাসরি কথা বলতে চান। কোনো ভুল বোঝাবুঝি হলে সমাধান করতে চান।’

মাসুম জানায়, গতকাল দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে মিঠুর সঙ্গে শাজাহানপুর ইউএনর কার্যালয়ে যাই আমি। ইউএনওর সঙ্গে কথার মধ্যে ফেসবুকের স্ট্যাটাসের বিষয়টি উঠে আসে। এ সময় তিনি (ইউএনও) বলেন আপনার ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে আমি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারি। তখন আমি বলি আমার বিরুদ্ধে আপনি মামলা করেন। তখন ইউএনও বলেন, আপনি সাংবাদিকতার কী জানেন? আপনি এভাবে ফেসবুকে লিখতে পারেন না। তখন আমি বলি, আমি তো আপনার অন্য কোনো বিষয় নিয়ে লিখিনি। আমি লিখেছি আপনি আমার ফোন রিসিভ করেননি। এই অধিকার আমার আছে। এরপর তিনি আমার আইডি কার্ড দেখেন । কার্ড দেখে বলেন। এই পত্রিকার নাম তো শুনিনি।’

মাসুম অভিযোগ করেন, এরপর ইউএনও জানতে চান আমার পরিবারের কে কে আছেন? তখন আমি বলি আমার পরিবারের তথ্য ব্যক্তিগত। এসব তথ্য আমি আপনাকে বলতে বাধ্য নই। ওখানে যা কথা হয়েছে সবগুলো কলার মাধ্যমে তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন।’

মাসুম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার সময় শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় শাজাহানপুর উপজেলা মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফুর রহমান মিঠুর সঙ্গে। মিঠু বলেন, উপজেলায় চারটি প্রেসক্লাব রয়েছে। এর মধ্যে ইউএনও তিনি প্রেসক্লাবের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন যে, কোনো ঘটনার কারণে উপজেলার সব সাংবাদিকের ফোন না ধরলেও চলবে, শুধুমাত্র প্রেসক্লাবগুলোর চার সভাপতির সাথে কথা বললেই হবে। তবে এই বিষয়টি আমি জানতাম না। এর মধ্যে মাসুম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। আমি ওই সংগঠনের সভাপতি। এ কারণে ইউএনও তার কার্যালয়ে মাসুমকে নিয়ে যেতে বলেন। এরপর আমরা সেখানে যাই। তবে মাসুম এবং ইউএনওর কথার মধ্যে ইউএনও বলেন, ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাসের কারণে আমি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারি।’

অভিযোগের বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় শাজাহানপুর উপজেরা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা পারভীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ মুঠোফোনে গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমি ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতেছি। যদি হুমকি দিয়ে থাকে তবে বিষয়টি ঠিক হবে না। আমি বলে দিচ্ছি সবার সাথে ভালো ব্যবহার করার জন্য।’

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com