করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করছেন তিনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এই ভিডিও কনফারেন্সে বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী এবং সিরাজগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ বাহিনী, সিভিল সার্জন, নার্স, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সেনাসদস্য, মসজিদের ইমাম, শিক্ষক সহ বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে মতবিনিময় করছেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন ফসল উঠছে। এরপর ফসল লাগাতে হবে। আস্তে আস্তে আমাদের সবকিছু উন্মুক্ত করতে হবে। সবাই নিজেকে সুরক্ষিত রেখে কাজ করবেন। সেটাই আমরা অনুরোধ করব।
তিনি বলেন, স্কুল সহ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটাও খুলবে না। অন্তত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ সবকিছু বন্ধ থাকবে। দেখা যাক করোনাভাইরাস কী হয়। যখন এটা থামবে তখন আমরা খুলব।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা করোনা রোগীদের দেখাশোনা করছেন তাদের প্রণোদনা দিয়েছি। যদি কেউ অসুস্থ হন তাদের বিনা পয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তাছাড়া আমরা পাঁচ লাখ থেকে ৫৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেব। এভাবে বিভিন্ন সহযোগিতার আশ্বাস আমরা দিয়েছি এবং সেটা করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি অনুযায়ী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৫ মে ২০২০ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলা জানানো হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে কয়েক দফা সরকার সাধারণ ছুটি ঘোঘণা করে সরকার। সে ছুটি অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের আগেই যারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন তারা সুদ নিয়ে চিন্তা করবেন না। এই সুদ কতটুকু কমানো যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, যারা ইতিমধ্যে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এই কয় মাস সবকিছু বন্ধ দেখে তাদের ঋণের সুদ বেড়ে গেছে। সেটার জন্য আপনারা চিন্তা করবেন না। কারণে এই সুদ এখনই নেয়ার কথা না। এছাড়া এই কনফারেন্সের পরেই অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসবো।
দুর্ভিক্ষ এড়াতে সাধ্যমতো ফসল উৎপাদনের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবাই সবাইকে সাহায্য করেন আর সবাই সুরক্ষিত থাকেন। যেহেতু এখন কিছু কিছু ফসল আমাদের উঠছে, এরপর ফসল লাগাতে হবে। জীবনযাপনের জন্য কিছু কিছু জিনিস আমাদের উন্মুক্ত করতে হবে। সে কারণে সবাই নিজেকে সুরক্ষিত রেখেই কাজ করবেন। সেটাই আমরা অনুরোধ করবো।
এসময় তিনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঘরে বসে তারাবীহর নামাজ পড়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা হাত পেতে চাইতে পারছে না তাদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি। এরই মধ্যে আমরা খাদ্য বিলি করেছি। রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে রমজানের মাঝামাঝি আবার খাদ্য বিলি করবো। পণ্য পরিবহনে কেউ বাধা দিবে না। বরং সুযোগ দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে আরো সুযোগ দেওয়া হবে। যেন পণ্য সরবরাহ সঠিক থাকে। দুর্যোগ আসবে সেটা মোকাবেলায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আমরা আবার আলোর পথে যাত্রা করবো।