বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘকায় ব্যক্তি কক্সবাজারের জিন্নাত আলী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। খবর দেশ রুপান্তর সোমবার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জিন্নাত আলীর মস্তিষ্কে টিউমারটি বড় হয়েছে, তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। রবিবার দীর্ঘকায় এই ব্যক্তিকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে তাকে নিউরোলজি বিভাগের ভর্তি করা হয়।
চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরীর বলেন, সোমবার দুপুরে নিউরোলজি ওয়ার্ড থেকে জিন্নাত আলীকে নিউরোসার্জারিতে পাঠানো হয়। এ সময় তার জ্ঞান ছিল না। বর্তমানে ওনার পরিস্থিতি এতই জটিল যে, আর জ্ঞান ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ।
জিন্নাত আলীর মস্তিষ্কে টিউমার আছে এবং সেটা খুব বড় জানিয়ে ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী আরও বলেন, এই মুহূর্তে টিউমার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব না। কেননা তার শারীরিক কন্ডিশন ওই অবস্থায় নেই। ছোটবেলা থেকেই ওনার মধ্যে হরমোনজনিত সমস্যা আছে। এই কারণেই তার উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি মস্তিষ্কে টিউমার তার শারীরিক অবস্থাকে আরও জটিল করেছে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামের কৃষক আমীর হামজার ছেলে জিন্নাত আলীর জন্ম ১৯৯৬ সালে। আমীর হামজার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে জিন্নাত তৃতীয়। ১২ বছর বয়স থেকেই তার উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে।
২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জিন্নাত আলীকে নিয়ে গিয়েছিলেন কক্সবাজারের রামু-সদর আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল। সেসময় জিন্নাত আলীর উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ২ ইঞ্চি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেসময় জিন্নাত আলী তার অস্বাভাবিক লম্বা হওয়ায় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তখন প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। সেসময় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়। পরে সুস্থ হয়ে জিন্নাত বাড়ি ফেরত যান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতায় জিন্নাতকে তার এলাকায় একটি দোকানও করে দেওয়া হয়।