বগুড়ার শাজাহানপুরে আজিজুল হক নামের এক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীদের কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।উপজেলার নয়মাইল জামালপুর গ্রামের ভূক্তভোগি কয়েকটি পরিবার তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছে। অপরদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আজিজুল হক ভূক্তভোগিদের টাকা ফেরত দিবেন বলে জানিয়েছেন।
এই গ্রামের আবদুস সাত্তারের ২১ বছরের একটি শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। বয়সের সঙ্গে বাড়েনি তার দেহের উচ্চতা, গঠন ও বুদ্ধি। সুপারি বিক্রি করে সংসার চালান আবদুস সাত্তার। প্রায় ৫ মাস পূর্বে মেয়েকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিতে যোগাযোগ করেছিল ইউপি সদস্য আজিজুল হকে সঙ্গে। কিন্তু আজিজুল হক তাকে বলে টাকা ছাড়া কার্ড হয়না। অনেক কষ্টে দুই ধাপে দুই হাজার সাত’শ টাকা আজিজুল মেম্বারকে দিয়েছিলেন আবদুস সাত্তার। কিন্তু ঘুষ দিয়েও তিনি এখন পর্যন্ত তার মেয়ের প্রতিবন্ধী কার্ড পাননি।দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান ফজলু। তার ঘরেও জন্ম নেয় ফাতেমা নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে। ফাতেমার বয়স ৫ বছর। এই শিশু কন্যাকেও প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে দুই হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আজিজুল মেম্বার। ট্রাক হেলপার আরিফুর রহমানের চার বছর বয়সের একটি শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। এই শিশু সন্তানের নাম নূর ইসলাম। তাকেও কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন আজিজুল মেম্বার। এছাড়াও রব্বানী নামের এক হোটেল ব্যবসায়ীর সাত বছর বয়সের শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে কার্ড করে দিবে বলে পাঁচ’শ টাকা ঘুষ নিয়েছেন আজিজুল মেম্বার। এছাড়াও উপজেলার বামুনিয়া মন্ডলপাড়ার কৃষক আনিছুর রহমান তার শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলের কার্ডের জন্য আজিজুলকে দুই হাজার টাকা দিয়েও কার্ড পাননি। তার ছেলের নাম কাউসার, বয়স পাঁচ বছর।ভূক্তভোগিদের অভিযোগ, পাঁচ মাস পূর্বে তাদের প্রতিবন্ধী সন্তানের কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক। কিন্তু এখন এসে তিনি বলছেন উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স থেকে সনদপত্র নিয়ে আসতে হবে। একথা আগে বলেননি আজিজুল হক। আগে তাদের বলা হয়েছিল টাকা দিলেই কার্ড হয়ে যাবে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আজিজুল হক জানান, তিনি টাকা গুলো নিয়ে আরেক জায়গায় দিয়েছেন প্রতিবন্ধীদের কার্ড করে দেওয়ার জন্যেই। কিন্তু কাজ হয়নি। তিনি সেখান থেকে টাকা ফেরত পাবেন। টাকা ফেরত পাওয়া মাত্রই ভূক্তভোগিদের দিয়ে দিবেন। সেখান থেকে টাকা ফেরত না পেলেও তিনি নিজের কাছ থেকেই ভূক্তভোগিদের টাকা ফেরত দিবেন।এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মাহমুদা পারভীনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।