ঘাতকব্যাধী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ সাধারণ মানুষের মনে অনেকটায় আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাধিটি এতটায় ভয়াবহ যে কেউ সাধারণ ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভুলেও কাছে যায় না। এমনই বাস্তব প্রমান মিলেছে বগুড়ার মহাস্থান বাসষ্ট্যাণ্ড বন্দরে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান বাসষ্ট্যাণ্ড যাত্রী ছাউনির নিচে সোমবার (১৮মে) দুপুর থেকে অজ্ঞাত শ্বাসকষ্ট এক ব্যক্তি (৪৫) কে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে ওই যাত্রী ছাউনি লাল ফিতা দিয়ে ঘিরে রেখে খবর দেয় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে। ততক্ষণে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করে। পুলিশ ওই বন্দর এলাকা লকডাউন করলেও মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল রোধ করতে পারেনি। তারপরেও লকডাউনে চারিদিকে জন শূণ্য ছিল। করোনা আতঙ্কে কেউ পাশে যায়নি। এরপর বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও শফিক আমিন কাজল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি প্রাথমিক ভাবে মাজারের দানবাক্সের পাশে অচেতন অবস্থায় পরিত্যক্ত ওই ব্যক্তিকে দেখে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্সকে খবর দেয়। দ্রুতসময়ে এ্যাম্বুলেন্সটি বাসষ্ট্যাণ্ড এলে
আরএমও শফিক আমিন কাজল, ড্রাইভার গাফাকা, ওয়ার্ডবয় আনিছুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণকালে কোন অসুস্থ্য ব্যক্তির কাছে যেখানে নিজের আপন জনকেও পাওয়া যায় না সেখানে ডাক্তাররা কিভাবে নিজের জীবন বাজি রেখে অসুস্থ্য ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেল। বিষয়টি অবাক করে তোলে আশেপাশের বাসিন্দাদের। তারা ওই উদ্ধারকারী ডাক্তার টিমকে দেশের ভয়াবহ মুহুর্তে সাহসী বীর আখ্যায়িত করে সালাম জানিয়েছেন। করোনা সন্দেহ ওই ব্যক্তিটি অচেতন থাকায় তার পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে তার পাশে একটি ব্যাগ দেখে স্থানীয়দের ধারণা ওই ব্যক্তি ঢাকা ফেরত রংপুর অথবা গাইবান্ধা এলাকার কৃষিশ্রমিক হতে পারে। এ বিষয়ে আরএমও শফিক আমিন কাজলের সাথে ফোনে কথা বললে তিনি জানান, ওই ব্যক্তির এখনো জ্ঞান ফেরেনি। তার শরীরের পালস ভাল। তিনি ধারনা করছেন ঈদ মৌসুমে কিছু অসাধু ব্যক্তিরা রাস্তায় অচেতনাশক জাতীয় কোন পদার্থ দিয়ে তাকে অচেতন করে তার কাছ থেকে কিছু লুটিয়ে নিতে পারে।