Logo




মিমাংসার কথা বলে বাদীর স্বামীকে থানায় ডেকে নিয়ে মামলায় চালান

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।
আপডেট করা হয়েছে : সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০

বগুড়ার শাজাহানপুরে রাস্তা সংস্কার ও পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মাণ নিয়ে দু’টি পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু থানা পুলিশ এক পক্ষের অভিযোগ আমলে না নিয়ে মিমাংসা কথা বলে বাদীর স্বামীকে থানায় ডেকে নিয়ে অপর পক্ষের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। এঘটনায় থানা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহল ।স্থানীয়রা জানান, উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নের ডোমনপুকুর নতুনপাড়ায় বগুড়া অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল আকরাম হোসেন তার বাড়ির সামনে যাতায়াতের রাস্তা নীচু হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগে ওই রাস্তায় মাটি কেটে উচু করেন। এনিয়ে প্রতিবেশী মৃত শাহীনুল ইসলামের স্ত্রী মাকছুদা পারভীন বাদী হলে গত মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল আকরাম হোসেন জানান, স্থানীয় মেম্বারের পরামর্শে নিজ উদ্যোগে রাস্তায় মাটি কেটে উচু করেন। কিন্তু প্রতিবেশী মাকছুদা পারভীন বাদী হন। এনিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় মেম্বার জাহিদুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার তবিবর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ফারুক আহমেদ, শিক্ষক আব্দুর রহিম, তজমল হোসেন সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধান করেন। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মাণ নিয়ে প্রতিবেশী শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা ইসলামের সাথে মাকছুদা পারভীন ও তার মেয়ে সানজিদা মৌরিন কনা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেন। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পর বিকেলে মাকছুদা পারভীনের ভাগিনা বাবু মিয়া এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করলে উভয়ের মধ্যে গালিগালাজের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ করেন। মাহমুদা ইসলামের স্বামী শহিদুল ইসলাম জানান, মারধরের ঘটনায় তার স্ত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দেয়ার পর আপোষের কথা বলে তাদেরকে থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। একপর্যায়ে তাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো অপর পক্ষের অভিযোগ আমলে নিয়ে পাল্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অন্যায় ভাবে তাকে ও তার আদালতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। পরদিন জামিনে মুক্ত হন তিনি।অপরদিকে মাকসুদা পারভীন জানান, মাহমুদা ইসলাম ও তার স্বামী শহিদুল ইসলাম সহ তাদের লোকজন তার মেয়ে সানজিদা মৌরিন কনাকে মারধর করায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন জানান, তিনি সহ ইউপি সদস্য ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে রাস্তার বিষয়টি সমাধান করা হয়। কিন্তু মাকছুদা পারভীন ও মাহমুদা ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মাকছুদা পারভীনের মেয়ে সানজিদা মৌরিন কনা উত্তেজিত হয়ে পায়ের সেন্ডেল খুলে সবার সামনে মাহমুদা ইসলামের গালে আঘাত করেন। এছাড়া মাকছুদা পারভীনের বড়ভাই শফিকুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে মাহমুদা ইসলামের চুল ধরে টানাহেচড়া করেন। এসময় উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে তাদেরকে শান্ত করা হয়। কিন্তু মাকছুদা পারভীন এজাহারে যা উল্লেখ করেছেন তা সঠিক নয়। তাছাড়া পুলিশের পক্ষপাতিত্ব খুবই দুঃখজনক।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম জানান, মাকছুদা পারভীন বাদী হয়ে থানায় যে এজাহার করেছেন তা সঠিক নয়। আব্দুর রহিম মাষ্টার, মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন, সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের পক্ষপাতিত্ব করা মোটেও ঠিক হয়নি। পুলিশের উচিত ছিল সংশ্লীষ্ট সকলের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।
এবিষয়ে থানার ওসি আজিম উদ্দীনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি না থাকায় থানার ওসি (তদন্ত) আমবার হোসেন জানান, ওসি সাহেব তিন দিনের ছুটিতে আছেন। তাছাড়া এই বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com