Logo




বগুড়ার বহুল আলোচিত নব্য সাহেদ আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানার কুশপুত্তলিকা দাহ…

এস আই সুমন,স্টাফ রিপোর্টারঃ
আপডেট করা হয়েছে : বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০

 বগুড়ার বহুল আলোচিত নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন রানার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা। ৭ই অক্টোবর দুপুরে নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের সামনে আনোয়ার হোসেন রানার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এছাড়া বগুড়া সদর থানায় মামলা রেকর্ডের পর রানা ও তার স্ত্রীকে ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে বলে জানা গেছে। আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জিম্মি ও প্রতারণা করে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে তার শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগম গত সোমবার রাতে সদর থানায় এজাহার দেন। এতে আনোয়ার হোসেন রানা ও তার স্ত্রীসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা ওরফে ক্যালা, তার স্ত্রী আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারা, সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরির ম্যানেজার কাম-ক্যাশিয়ার নজরুল ইসলাম, সরিফ সিএনজি লিমিটেডের ম্যানেজার হাফিজার রহমান এবং দেলওয়ারা-সেখ শরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেটের ম্যানেজার ও রানার সহকারী তৌহিদুল ইসলাম।
বগুড়া শহরের কাটনারপাড়ার মরহুম সেখ সরিফ উদ্দিনের স্ত্রী দেলওয়ারা বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন- তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত পাঁচ বছর জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারা তার বাড়িতে থাকেন। অসুস্থতার সুযোগে ও তাদের প্রস্তাবে মৌখিকভাবে বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা ও তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব দেয়া হয় জামাইকে। পরবর্তীতে সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরির ম্যানেজার কাম-ক্যাশিয়ার নজরুল ইসলাম, সরিফ সিএনজি লিমিটেডের ম্যানেজার হাফিজার রহমান ও দেলওয়ারা-সেখ শরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেটের ম্যানেজার এবং রানার সহকারী তৌহিদুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি, প্রতারণা ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেক, এফডিআর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেয়।
পরবর্তীতে ভুয়া কাগজ তৈরি করে ২০১৫ সালের ১ জুন থেকে ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের এফডিআর ভেঙে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এছাড়া ব্যবসা ও ব্যাংক থেকে আরও ৫০ কোটি টাকা উত্তোলনের পর আত্মসাৎ করেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রধান আসামি আনোয়ার হোসেন রানা আগ্নেয়াস্ত্র ধরে এসব ফাঁস না করতে নিষেধ করে। হত্যার হুমকি দেয়ায় তিনি এতদিন গোপন রাখেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারা বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। আওয়ামী লীগ নেতা রানার দাবি অনুযায়ী, ভায়রা ও শ্যালিকারা তার শাশুড়িকে জিম্মি করে থানায় মিথ্যা মামলা দিতে বাধ্য করেছেন। সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, সোমবার রাতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। এখন আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
অপরদিকে শাশুড়ির শতকোটি টাকা আত্মসাৎকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা। ৭ই অক্টোবর দুপুর ১২ টায় নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের সামনে আনোয়ার হোসেন রানার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তার বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে এ কুশপুত্তলিকা দাহ করে দলীয় নেতাকর্মীরা। কুশপুত্তলিকা দাহ করার কারন ব্যাখ্যা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম শেখ জানিয়েছেন, আনোয়ার হোসেন রানা আওয়ামী লীগের পদ-পদবী ব্যবহার করে নানা ধরণের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। এতে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। যাহা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সে আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত। আনোয়ার হোসেন রানা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বিধাদদ্ব সৃষ্টি করেছে। এমনকি ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে। এছাড়াও হামলা-মারপিটসহ নানাভাবে অন্যায় অত্যাচার করে থাকে। তার দ্বারা অনেক সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সে কারণে আনোয়ার হোসেন রানাকে অবিলম্বে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারসহ শাস্তির দাবি জানাই। সাধারন জনগন আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বগুড়ার আলোচিত নব্য সাহেদ আনোয়ার হোসেন রানাকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য বগুড়ার পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com