Logo




বগুড়ায় নব্য সাহেদ আ’লীগ নেতা রানার বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ

এস আই সুমনঃ স্টাফ রির্পোটারঃ
আপডেট করা হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০

বগুড়ার বহুল আলোচিত নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার বিরুদ্ধে শাশুড়ির শতকোটি টাকা আত্মসাতের মামলার পর প্রতারণা করে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। চার শ্যালিকা বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ডিআইজি, পুলিশ সুপার, এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।
মাহবুবা খানম আমেনা, নাদিরা শরিফা সুলতানা খানম বিলকিছ, কানিজ ফাতেমা পুতুল ও তৌহিদা শরিফা সুলতানা শান্তনা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বগুড়ার নন্দীগ্রামের কলেজপাড়ার সামসুল হকের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা ভুয়া আয়কর সনদ দেখিয়ে ও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে শর্টগানের লাইসেন্স গ্রহণ করেন। আইন অনুসারে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে প্রতি বছর দুই লাখ টাকা করে পরপর তিন বছর সমপরিমাণ টাকা আয়কর দিতে হয়। কিন্তু রানা জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া আয়কর সনদ দেখিয়ে ও জেলা প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে, অসত্য তথ্য দিয়ে শর্টগানের লাইসেন্স নিয়েছেন। রানা বগুড়া শহরের কাটনারপাড়ার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী দেলওয়ারা বেওয়ার বড় জামাতা হাজী সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীন দৈনিক দূর্জয় বাংলা পত্রিকার অফিস সহকারি ছিলেন। সাইফুল ইসলাম বিবাহিত ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া দুই ছেলে রেখে মারা যান। এ অবস্থায় রানা স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও মালিকের (সাইফুল) স্ত্রী আকিলা শরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারাকে প্রলোভন দেখিয়ে সকলের অজ্ঞাতে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর আঞ্জুয়ারা বড় দুই ছেলে থাকার পরও মরহুম স্বামী হাজী সাইফুল ইসলামের রিভলবারের লাইসেন্স অবৈধভাবে নিজ নামে করে নেন। পরে আঞ্জুয়ারা ওই অস্ত্র দ্বিতীয় স্বামী আনোয়ার হোসেন রানাকে ব্যবহার করতে দেন। ফলে রানা একটি শর্টগান ও একটি রিভলবার বহণ করেন। তিনি এসব আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমাদের ও পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। এছাড়া তাদের বৃদ্ধা মা দেলওয়ারা বেওয়াকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শতাধিক কোটি টাকার মূল্যের সম্পদ ও অর্থ যবরদখল করেছেন। এর প্রেক্ষিতে দেলওয়ারা বেওয়া গত ১ অক্টোবর সদর থানায় রানা, আঞ্জুয়ারাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এজাহার দেন। ৫ অক্টোবর রাতে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে।
এদিকে মামলা করার পর আনোয়ার হোসেন রানা এসব আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। তার অপকর্মের ব্যাপারে মুখ না খুলতেও ভয় দেখানো হচ্ছে। নিরাপত্তার ভয়ে অনেক কর্মচারি ইতিমধ্যে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। যেখানে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রগুলো প্রদর্শন ও বডিগার্ড এসব ব্যবহার করায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। এছাড়াও নন্দীগ্রাম উপজেলায় তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হুমকি-ধামকি এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি রানার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের হুকুমদাতা হিসেবে নন্দীগ্রাম থানায় মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। শ্যালিকারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক আগ্নেয়াস্ত্রের অব্যবহার রোধে লাইসেন্স বাতিল এবং রানার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা আত্মগোপনে থাকায় ও ফোন বন্ধ রাখার এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com