বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান নামাপাড়া গ্রামে ও আশপাশের এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবন। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদক বিরোধী বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছেন। জানা যায়, উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের মহাস্থান নামাপাড়া ও ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় হযরত শাহ সুলতান বলখী (রহঃ) এর মাজার এলাকা ও বাজারের আশপাশে এলাকা জুড়ে বীরদর্পে চলছে মাদকের জমজমাট ব্যবসা। এলাকাবাসী যুব সমাজ ও নারী-পুরুষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মহাস্থান নামাপাড়া গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র একাধিক মাদক মামলার আসামী আবু ছাইদ (২৮), সাকিল আহম্মেদ (২০) মোছাঃ জলি বেগম (২৫) স্বামী ছাইদ, মৃত লুৎফর রহমানের স্ত্রী সাহিদা বেগম(৪৫) ফিরোজের স্ত্রী সুন্দরী বেগম (৪৫) সিহাব হোসেন (২৩) সহ পাঁচ-ছয়জন নিজ বাড়িসহ এলাকায় প্রকাশ্যে, গাঁজা, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা হিরোইন বিক্রি করছেন। আগে তাঁরা কিছুটা গোপনে এ ব্যবসা চালালেও কিছু দিন হলো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধ থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। মাদক সহ একাধিক বার পুলিশ তাদের আটক করলেও কিছু দিন জেলহাজতে থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও মাদক পেশায় জড়িত হয়। ফিরোজের স্ত্রী সুন্দরী বেগম বেশ কয়েক মাস পূর্বে ইয়াবাসহ বগুড়া ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল। পরে জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও মাদক বিক্রি শুরু করে। শনিবার (১১অক্টোবর) বিকাল ৪টায় সরেজমিনে গিয়ে জানা য়ায়, ফিরোজের স্ত্রী সুন্দরীকে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ মাদক সহ আটক করেন। কিছু দিন হয় তো হাজত খেটে বের হয়ে আবার মাদকের বিস্তার ঘটাবে এমন প্রতিক্রিয়া জানান, এলাকার সচেতন মহল। এলাকাবাসী আরও জানান, শুধু নামাপাড়া নয়, মধ্যেপাড়া, মহাস্থান করতোয়া নদীর ব্রীজের পাশে দক্ষিণপাড়া, আকন্দপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মহাস্থানগড় দক্ষিণপাড়া, পাথরপাড়া, শালবাগানসহ আরও বেশকিছু এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকের হাতবদল হয়। মহাস্থান নামাপাড়া গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি লালু মিয়া জানান, প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মাদকসেবীরা এখানে আসে। সকাল-বিকেল এদের আনাগোনা বাড়ে। এদের অত্যাচারে নারী, শিশুসহ সাধারণ মানুষের পথচলাই কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে নারী ও ছাত্রীরা প্রায়ই এদের দ্বারা উত্ত্যক্ত হয়। মাদকসেবীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী সোমবার(১২অক্টোবর) বিকালে মাদক ব্যবসা ও সেবন বন্ধের দাবিতে এলাকার নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল ও তাদের শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর করেন। এ বিষয়ে রায়নগর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, মহাস্থান এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা ছিল। এটি ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিয়ে অনেকটা শূণ্যের কোঠায় নেমে আনা হয়েছিল। ইদানিং এটি আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদক বিক্রি ও সেবন ইউনিয়নের জন্য লজ্জার বিষয়। মাদক ব্যবসায়ীর কোন ছাড় নেই। এদের বিরুদ্ধে যদি বিপক্ষে স্বাক্ষী দিতে হয় আমি প্রস্তুত। আমি চাই যেকোনো মূল্যে এ এলাকা মাদকমুক্ত হোক। এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস.এম বদিউজ্জামান বলেন, শিবগঞ্জ থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীর কোন ঠাই নেই। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিব এবং নিচ্ছি। তার পরেও ওই এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হবে। মাদক ব্যবসায়ীরা দেশের শত্রু।
মন্তব্য