দুই যুগ ধরে বগুড়ায় যমুনা নদীর দুর্গম চরে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম লুৎফর শেখ। নদীপথে যাত্রী ও গরুবাহী নৌ ডাকাতি, চরের বাথান থেকে গরু লুট, চর দখল, চাঁদাবাজি, খুন, মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর পরিচালনাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন তিনি।
তার বসবাসও ছিলো যমুনায়। সেখানে থাইগ্লাস লাগানো এয়ারকন্ডিশন্ড (এসি) নৌকায় ছিলো তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপন। টিভি-ফ্রিজ সমৃদ্ধ এই নৌকাতেই ছিলো ভোগের জীবন। তবে এসব চলতো সৌরবিদ্যুতে। তার নৌকাতে আছে সিসি ক্যামেরাও।
সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনার চর চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের বহুলাডাঙ্গা চরের মুছা শেখের ছেলে লুৎফর। বহুলাডাঙ্গা চরের অবস্থান হলো সোনাতলা, গাইবান্ধার সাঘাটা, জামালপুরের মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর থানার সীমান্তবর্তী এলাকায়।
দুর্গম এলাকায় পুলিশের অভিযান ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুর্গম চরে আস্তানা গড়ে বিলাসী জীবন যাপন করেন লুৎফর। তার বাহিনীতে বিভিন্ন জেলার শতাধিক সদস্য রয়েছে বলে জানা গেছে।
লুৎফর শেখের বিরুদ্ধে ৪টি খুনসহ ডাকাতি মামলা ৩টি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা, ১টি দস্যুতা মামলা, ২টি অস্ত্র মামলাসহ মোট ১৫টি মামলা রয়েছে। যমুনা নদীর দুর্গম চরে আত্মগোপনে থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে আসছিল লুৎফর। তিনি বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা ও জামালপুরে অপরাধমূলক কাজ করতেন।
অবশেষে তাকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ির দুর্গমচর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ওয়ান শ্যুটারগান ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব নিশ্চিত করেছেন জেলা ডিবি পুলিশের ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, লুৎফরের বিরুদ্ধে সারিয়াকান্দি থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।