শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকায় বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিস্কারের কথা জানানো হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস।
প্রসঙ্গত, বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘের্ষ ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তাকবির ইসলাম। তাকবির জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মৃত্যুর আগে তার ওপর হামলার বর্ণনা দিয়ে গেছেন তিনি। এর একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। ভিডিওতে নিহত তাকবির বলেছিলেন আব্দুর রউফ নিজেই তাকে ছুরকাঘাত করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ছাত্রলীগ নেতা তাকবির ওই ভিডিওতে বলেন ‘আমার ডান পায়ে হাঁটুর নিচে ফ্র্যাকচার হইছে। ওখানে এসএফ পাইপ দিয়ে আর রড দিয়ে মারছে; চাপাতি দিয়ে আঘাত করছে। বাঁ হাতের কজ্বিতে আর কনুইয়ের মাঝখানেও মারছে, সেখানে ফ্র্যাকচার হইছে, ওখানে দুটা সেলাইও পড়ছে। মাথার পেছনে চারটা সেলাই পড়ছে, ওখানে চাপাতি দিয়ে আঘাত করছে। আমার কোমরের পাঁজরের নিচে দুই পার্শ্বেই দুটি স্টেপ (ছুরিকাঘাত) করেছে, আট ইঞ্চি করে ক্ষত হইছে। চার চারে আটটা সেলাই পড়ছে, স্টেপটা রউফ নিজেই করছে। শরীরে আরো অনেক জায়গায় ক্ষত হইছে, পুরো শরীরে পিটিয়েছে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে মোটর সাইকেলের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। শহরের টেম্পল রোডে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা তাকবিরসহ দুই গ্রুপের অন্তত ৯জন আহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়। গত শনিবার পৃথক দুটি মামলা করেন তাকবির ইসলামের মা আফরোজা ইসলাম ও আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সোহাগ হাসান।
ছাত্রলীগ নেতা তাকবিরের মায়ের করা মামলায় সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফকে প্রধান আসামী করা হয়। রউফসহ এ মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০ থেকে ৩৫জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় অন্য নামীয় আসামীরা হলেন, জাহিদ হাসান, আনোয়ার হোসেন, মো. তারেক, বিধান চন্দ্র মোহন্ত , নিশাদ ও আরমান।
ছাত্রলীগ নেতা সোহাগের করা মামলায় তাকবিরকে প্রধান আসামী করা হয়। তাকবিরসহ এ মামলায় ১২জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫জনকে আসামী করা হয়েছে।
সোহাগের করা মামলায় অন্য নামীয় আসামীরা হলেন, তোফায়েল আহমেদ, হাসিবুল হাসান শান্ত, আব্দুল্লাহ ঈমন, জয় কুমার দাস, শাহাদত জামান সঞ্জয়, সামিউল পরান সজল, সিজান রহমান, ফেরদৌস আলম সাফি, মাহবুবুল সাফিন, হাবিবুর রহমান ও মেহেদী হাসান।