Logo




প্রধানমন্ত্রী চাইলে পদ ছাড়ব: বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রতিবেদকের নাম :
আপডেট করা হয়েছে : সোমবার, ২৬ জুন, ২০২৩

জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নিত্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতি নিয়ে বিরোধীদলের তোপের মুখে পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার কারসাজিতে বাণিজ্যমন্ত্রীই জড়িত, বিরোধীদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনে তিনি পদত্যাগে প্রস্তুত বলেও জানান টিপু মুনশি।

প্রায় একমাসজুড়ে বাজেট অধিবেশনে একটানা সাধারণ আলোচনা শেষে সোমবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হয়। তবে বাজেটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা ক্ষোভ জানান। 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত দাবির সূত্র ধরে সংসদে বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতারা বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর ওপর দায় চাপিয়ে বক্তব্য রাখেন।সিন্ডিকেট এবং বাজার কারসাজির জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিও ওঠে সংসদে। এক সংসদ সদস্য বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এতটাই ব্যর্থ যে মানুষ এটিকে সিন্ডিকেটবান্ধব মন্ত্রণালয় বলে। এত ব্যর্থতার পরও মন্ত্রী কেন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন না?’
 
তবে এসবের উত্তরে দায় আমলে নিয়ে টিপু মুনশির জবাব, প্রধানমন্ত্রী চাইলে তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে প্রস্তুত আছেন।টিপু মুনশি বলেন, ‘বার বার বলা হচ্ছে, আমি ব্যবসায়ী, তাই ব্যবসায়ীরা আমার জন্য সুবিধা পাচ্ছে। যারা এ কথাগুলো বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটি কথাই বলি, তাদের রাজনীতির অভিজ্ঞতা কত বছরের আমি জানি না। কিন্তু আমি ৫৬ বছর ধরে রাজনীতি করি। আর ব্যবসা করি ৪০ থেকে ৪২ বছর ধরে।’ 
তিনি বলেন, ‘একজন তো বললো আমায় পদত্যাগ করতে। বেশ ভালো কথা বলেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো উনি (সেই সংসদ সদস্য) দায়িত্ব নিলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে উনাকে দায়িত্ব দিতে পারেন। এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।’ 
সবকিছুই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারপরও দায় নিয়ে বলছি যে আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি দ্রব্যমূল্য কমানোর।’ 
ডিমের খবর তিনি জানেন না উল্লেখ করে বাণিজমন্ত্রী বলেন, ‘ডিমের দাম বাড়ার বা কমার বিষয়টি যে মন্ত্রণালয় আছে তারা ঠিক করে দেন। একজন ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কথা বলেছেন। এটি আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনে। কি দাম হওয়া উঠিত তারা সেটি সুপারিশ করেন। তবে হয়তো কোথাও একটু গড়মিল থেকে যায়।’ 
দাম বেড়েছে কোনো সন্দেহ নেই মন্তব্য করে পেঁয়াজ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করছি। আমার পাশে কৃষিমন্ত্রী আছেন তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, কৃষকরা যেন এমন একটা দাম পান যাতে করে তারা উৎসাহিত হন। কারণ বছরে পেঁয়াজে আমাদের প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টন ঘাটতি আছে। যদি তারা একটু ভালো দাম পান তাহলে উৎপাদনের দিকে তারা মনোযোগী হবেন। 
তিনি বলেন, এ কথা ঠিক পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা হওয়া যৌক্তিক না। আমরা চেষ্টা করেছি, পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করেছি। আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতে চাচ্ছিলাম না যাতে করে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায়। কিন্তু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়ায় পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বর্তমানে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা আর দেশি পেঁয়াজের দাম ৬৫ টাকা। এটি আরও কমা উচিত বলে মনে করি।
চিনির দাম নিয়ে তিনি বলেন, ‘চিনির দামটা আমি নিজেও উপলব্ধি করি। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। আগেও বলেছি এটার উিউটি স্টাকচারটা যদি কমিয়ে দেয়া হয় তাহলে এর দাম ১০০ টাকার মধ্যে চলে আসবে। সেটা হয়তো উনি করবেন। এর আগেও তিনি করেছিলেন। গত এক/দেড় মাসের মধ্যে আমরা ২০ টাকা তেলের দাম কমিয়েছি। তবে এটা ঠিক সব সময় ১০০ ভাগ সফল হই তা নয়। স্বীকার করে নিচ্ছি অনেক সময় বাস্তবায়নটা ধীর গতিতে হয়।’এদিকে টানা ২ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের আলোচনার পর অর্থমন্ত্রী সংসদে নির্দিষ্টকরণ বিল উত্থাপন করলে উপস্থিত সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে পাস হয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট। 

মন্তব্য

মন্তব্য





এই ধরনের আরও খবর

ফেসবুকে আমরা




Theme Created By ThemesDealer.Com