স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় ছুরিকাঘাতে এইচএসসি পরিক্ষার্থী নাজিউর রহমান নাহিদ (১৯) হত্যা মামলার প্রধান আসামী আরাফাত হোসেন নীরব (২০) কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। নীরবের স্বীকারোক্তিতে এই হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়। গত বুধবার নাটোরের সিংড়া উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। এর আগে ঘটনার দিনই আটক করা হয়েছিলো রবিউল নামে আরেক আসামীকে। পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এদিকে এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে প্রেম বিষয়ক দ্বন্দ রয়েছে বলে জানাগেছে।
গত শনিবার এইচএসসি পরিক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার দুরুলিয়া গ্রামের ইউনিব্রাদার নামে একটি প্রোল্টিফার্মের সামনে নাহিদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। নাহিদ খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের নারিল্যা গ্রামের মতিউর রহমানের পুত্র। গত রোববার নিহতের পিতা বাদী হয়ে নীরব, রবিউলসহ ৫ জন নামীয় ও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাত আসামী করে শাজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, নিহত নাজিউর রহমান নাহিদ ও এই হত্যা মামলার আসামীরা সবাই এক সঙ্গে চলাফেরা করতো এবং তারা বন্ধু ছিলো। উপজেলার বোহাইল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয় তারা। বোহাইল গ্রামের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রধান আসামী নীরবের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু বোহাইল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করার পর ওই ছাত্রীর প্রেম হয় নিহত নাহিদের সঙ্গে। তাদের বন্ধুরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেও ওই ছাত্রী ও নাহিদ বগুড়া ক্যান্ট:পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হয়। এতে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের সৃষ্টি হয়।
তাদের এই প্রেমের বিষয়টি নজরে আসে ওই ছাত্রীর সাবেক প্রেমিক আরাফাত হোসেন নীরবের। নীরবসহ তার অন্য বন্ধুরা সাবধান করেছিলো নাহিদকে। তারা তাকে ওই মেয়েটির পথ থেকে সরে যেতেও বলেছিলো। কিন্তু দিনে দিনে নিহত নাহিদ ও মেয়েটির সম্পর্ক আরো প্রকাশ্যে চলে আসে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে নীরব। একপর্যায়ে নীরব তার মামাতো ভাই রবিউলসহ অপর সহযোগীদের বিষয়টি বলে। শেষে নাহিদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সুশান্ত কুমার সাহা জানান, বুধবার সন্ধায় নাটোরের সিংড়া থেকে নীরবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিরবের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থলের পাশের ধানক্ষেত থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও নীরবের ব্যবহৃত পায়ের স্যান্ডেল উদ্ধার করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।